প্রকাশিত: / বার পড়া হয়েছে
মানব সভ্যতার ইতিহাসে এমন ঘটনা আর একবারই নথিভুক্ত হয়েছে। একই ব্যক্তির দেহে একটি নয়, দু’টি নয়, তিন তিনটি যৌনাঙ্গ! কিছুদিন আগে এমনই বিরল ঘটনার সাক্ষী হন বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। গত বছরের শেষে বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা গবেষণার জন্য দেহ দান করেন এক ব্যক্তি। সেই দেহের পরীক্ষা নিরীক্ষা করার সময় চিকিৎসকরা যা দেখলেন তাতে চোখ মাথায় ওঠার উপক্রম! চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন ওই মৃত ব্যক্তির শরীরে তিনটি যৌনাঙ্গ ছিল, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে "ট্রিফেলিয়া" নামে পরিচিত।
ঘটনাটি ঘটেছে বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল স্কুলে। জন বুকানন নামের এক গবেষকের নেতৃত্বে ৭৮ বছর বয়সি এক ব্যক্তির দেহ ময়নাতদন্ত করছিলেন চিকিৎসকরা। তখনই তাঁরা জানতে পারেন যে, ওই ব্যক্তির জন্ম থেকেই তিনটি যৌনাঙ্গ ছিল। একটি যৌনাঙ্গ দৃশ্যমান ছিল, কিন্তু বাকি দু’টি যৌনাঙ্গ শরীরের ভিতরে ছিল। ভিতরের দু’টি ছোট লিঙ্গ স্তুপীকৃত আকারে ছিল এবং সেগুলির আকার প্রধান লিঙ্গের থেকে অনেকটাই ছোট।
বুকানন জানিয়েছেন, এই ধরনের ঘটনাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় "পলিফেলিয়া" বলা হয়, যার অর্থ একাধিক যৌনাঙ্গ থাকা। তিনটি যৌনাঙ্গ থাকার ঘটনাকে "ট্রিফেলিয়া" বলা হয়, যা খুবই বিরল। ১৬০৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পলিফেলিয়ার একাধিক উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যায়। তবে ট্রিফেলিয়ার উদাহরণ এর আগে শুধুমাত্র একবারই নথিভুক্ত করা হয়েছিল। ২০২০ সালে ইরাকের তিন মাস বয়সি একটি শিশুর শরীরে প্রথম তিনটি পুরুষাঙ্গের দেখা মিলেছিল। কিন্তু সেক্ষেত্রে সবগুলি লিঙ্গই বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছিল। ফলে চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুটিকে সুস্থ করে তোলেন।
এক্ষেত্ রে যেহেতু বাকি দুই যৌনাঙ্গ দেহের ভিতরে ছিল, তাই সম্ভবত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কোনও দিন বুঝতেই পারেননি যে তিনি এই বিরল রোগের শিকার। কিন্তু কেন এমন হয়। বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছেন না। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকরাও ঘটনাটি নিয়ে আরও গবেষণা করছেন। তবে এই নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই যে, এই ঘটনাটি চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, যা মানব শরীরের গঠন এবং জটিলতা সম্পর্কে আরও জানার সুযোগ করে দিয়েছে গবেষকদের।